বিজ্ঞপ্তি
অক্টোবর / ১৬ / ২০২২
গত দু-যুগেরও বেশি সময় ধরে ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী তিনটি শুল্ক ষ্টেশন দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি করা হয়। এর মাধ্যমে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলেও অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি শুল্ক ষ্টেশনে,
তেমনি এর সাথে সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত সড়কটিও বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে এর সাথে সম্পৃক্ত আমদানিকারক,ব্যবসায়ী ও কাস্টম কর্মকর্তাগন প্রতিদিনেই চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ভারতের মেঘালয় পাহাড় ঘেষা সরকারের রাজস্ব আদায়ের বড় খাত বড়ছড়া,চারাগাঁও,বাগলী শুল্ক ষ্টেশন।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়,জেলা সীমান্তের বড়ছড়া,চারাগাঁও,বাগলী শুল্ক ষ্টেশন দিয়ে এলসির মাধ্যমে শত শত ভারতীয় ট্রাক দিয়ে ভারত থেকে আমদানী করা কয়লা ইটের ভাটাসহ নানা কাজে ব্যবহারের জন্য ও চুনাপাথর সিমেন্ট ও চুন তৈরি কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় চুনাপাথর তাই বিভিন্ন ফ্যাক্টরীতে অধিক চাহিদা থাকায় কয়লার পাশাপাশি চুনাপাথর আমদানির করা হয়। এতে করে বিপুল পরিমাণ রাজস্বও পাচ্ছে সরকার। কিএসব মালামাল পরিবহনের জন্য ভারতের অংশে পাকা সড়ক থাকলেও বাংলাদেশের অংশে আজও তৈরি হয়নি পাকা সড়ক।
অপর দিকে,তিনটি শুল্ক স্টেশনের পাশ দিয়ে একটি সীমান্ত সড়ক(বিন্নাকুলি-বড়ছড়া-চারাগাও-বাগলী-মধ্যনগর উপজেলা পর্যন্ত সড়কটি)রয়েছে যা নেত্রকোনো জেলা হয়ে ঢাকার সাথে সড়ক পথের সহজে ও দ্রæত সময়ে যোগাযোগ করা সহজ যার কাজের অগ্রগতি দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে। এই সড়কটিসহ শুল্ক ষ্টেশনের সড়ক গুলো পাকাকরণ না হওয়ায় ভারত থেকে কয়লা চুনাপাথর আমদানী করে ব্যবসায়ীরা প্রথমে নিজেদের ডিপোতে ভাঙ্গাচরা সড়ক দিয়ে নিয়ে ষ্টক করে বর্ষায় ছোট ছোট নৌকায় করে ও শুষ্ক মৌসুমে ট্রলি দিয়ে কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নতুন বাজার এলাকায় পাটলাই নদীতে বল্কহেড নৌকা ভরে নৌপথে পাঠাতে হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। আমদানি করা কয়লা আর চুনাপাথর পরিবহনে নদীপথ ছাড়া কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। কিন্তু সেখানেও রয়েছে সমস্যা,পাটলাই নদীসহ বিভিন্ন নদীগুলোর পানি শুকনো মৌসুমে কমে যাওয়া ও নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ার কারনে নৌপথে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ নৌজট আবার প্রায়ই বন্ধ থাকে নৌযান চলাচল।
আবু জাহান তালুকদারসহ উপজেলার সচেতন মহল বলছেন,উপজেলার সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক (বিন্নাকুলি-বড়ছড়া-চারাগাও-বাগলী-মধ্যনগর উপজেলা পর্যন্ত সড়কটি) পাকাকরণ হলে আমদানিকারকগনসহ সবাই উপকৃত হবে। ট্রাক দিয়ে সহজে সরাসরি রাজধানীসহ দেশজুড়ে কয়লা ও চুনাপাথর পাঠাতে পারবে এতে করে আমদানি বাড়ার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে। আর সীমান্ত নদী গুলো ড্রেজিং করা হলে নৌপথে সৃষ্টি দীর্ঘ নৌজট আবার প্রায়ই নৌযান চলাচল বন্ধ থাকার দুর্ভোগ কমবে।
পরিতুষ দাস,সেলিম সহ ব্যবসায়ীরা জানান,শুল্ক ষ্টেশনের সড়ক গুলোর বেহাল অবস্থা থাকায় প্রায় সময় মালামাল পরিবহনের যানবাহন চলাচলে দূর্ঘটনার শিকার হয়। বর্ষার মৌসুমে কাচা সড়কের কারনে মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। ফলে চাহিদা ও সময় মত ইটের ভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে নিদিষ্ট গন্তব্যে কয়লা ও চুনাপাথর পাঠাতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হওয়ায় পাশাপাশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের বলেন,প্রতিবছর সরকার যে পরিমান রাজস্ব আয় করে সেই পরিমান তিনটি শুল্ক ষ্টেশনে উন্নয়ন হয়নি। বাংলাদেশ অংশের সড়ক পাকা হয়নি,বড়ছড়া থেকে নতুন বাজার সড়ক ভাঙ্গাচুরা,নদীরও ড্রেজিং করা হয়নি ফলে নানামুখী অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। এতে করে লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়।
তিনটি শুল্ক ষ্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিকুল আলমসহ কমর্রত কাস্টম কর্মকর্তাগন জানান,শুরু থেকেই নিজস্ব ভবন ও অফিস নেই,তিনটি শুল্ক ষ্টেশনের জিরও পয়েন্টে বাংলাদেশ সীমান্তে টিনের ঘর তৈরি করে দিনের কার্যক্রম পরিচালিত হয় আর বড়ছড়া শুল্ক ষ্টেশন সংলগ্ন জয়বাংলা বাজারে একটি আবাসিক হোটেলের দ্বিতীয় তলায় কয়েকটি রুম ভাড়া নিয়ে তিনটি শুল্ক ষ্টেশনের কাস্টমস কর্মকর্তাদের অফিস পরিচালিত হচ্ছে। ভবনের জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে তা প্রক্রিয়াধিন আছে।
সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন জানান, সীমান্ত সড়কটিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সেতুর কাজ দ্রæত গতিতে চলমান রয়েছে। সেতু গুলো সম্পূর্ণ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে।