পুণ্যভূমি স্পোর্টস ডেস্ক
নভেম্বর / ২৬ / ২০২২
তিউনিশিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপে টিকে থাকলো অস্ট্রেলিয়া। আজ আল-ওয়াকরাহ’র
আল-জানুব স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ডি’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে
তিউনিশিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়েছে সকারুজরা। প্রথমার্ধের ২৩ মিনিটে জয়সুচক
একমাত্র গোলটি করেছেন মিচেল ডিউক।
ফ্রান্সের কাছে প্রথম ম্যাচে ৪-১ গোলে পরাজিত অস্ট্রেলিয়ার সামনে বিশ^কাপে
টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচে জয় ভিন্ন অন্য কোন পথ খোল ছিলনা। অন্যদিকে
গোলশুন্য ড্র করে ডেনমার্ককে রুখে দিয়ে এক পয়েন্ট নিয়ে অপেক্ষাকৃত
সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল তিউনিশিয়া।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচ হলেও শুরু থেকেই দুই দলের মধ্যে বিরাজ করছিল নক আউট
ম্যাচের আমেজ। শুরুতে অবশ্য দুই দলই কিছুটা চাপে থাকার কারণে এলোমেলো ছিল।
তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের গুছিয়ে নিতে শুরু করে তিউনিশিয়া ও
অস্ট্রেলিয়া।
ম্যাচের প্রথম সুযোগটি অবশ্য পেয়েছিল সকারুজরা। ৬ষ্ঠ মিনিটে সকারুজ
মিডফিল্ডার এ্যারন মুই তিউনিশিয়ার সিমান্তে ঢুকে পড়লে তাকে বাঁধা দেন
মোহাম্মদ ড্রাগার। ফলে ফ্রি কিকের বাঁশি দেন রেফারি। মুই নিজেই ফ্রি কিকটি
নিয়েছিলেন বটে, তবে সফল হননি।
২১ মিনিটে প্রতি আক্রমনে গোলের দারুন একটি সুযোগ সৃস্টি করেন তিউনিশিয়ার ৯
নম্বর জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় ইসাম জেবালিম। সতীর্থ ইউসুফ মাসাকনির পাস থেকে
বল নিয়ে দ্রুত অস্ট্রেলিয় সিমানায় ঢুকে পড়ে তিনি। তবে বলে জুতসই শট নিতে
পারেননি তিনি। বলটি তার নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। পরে অবশ্য মোহাম্মদ
ড্রাগা দূরপাল্লার শট নিলেও সেটি লক্ষ্যভ্রস্ট হয়।
দুই মিনিট পরেই গোল পেয়ে যায় এশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করা অস্ট্রেলিয়া। ২৩
মিনিটে প্রতি আক্রমন থেকে বাঁ প্রান্তে ডি বক্সের বাইরে থেকে ক্রেইগ
গুডইউনের ক্রসের বল ব্যক হেডের মাধ্যমে তিউনিশিয়ার জালে জড়িয়ে দেন মিচেল
ডিউক (১-০)।
২৯ মিনিটে সকারুজদের হয়ে ফের আক্রমনে যান ডিউক। কিন্তু ডিফেন্ডার মোনতাসার
তালবি এগিয়ে এসে তার পথ রোধ করেন এবং তাকে ফেলে দেন। ৩৫ মিনিটে কর্নার পেয়ে
কাজে লাগাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। এই সময় পর্যন্ত অবশ্য বল দখলের লড়াইয়ে
এগিয়ে ছিল তারা। ৫১শতাংশ তাদের নিয়ন্ত্রনে ছিল অস্ট্রেলিয়ার। আর তিউনিশিয়ার
নিয়ন্ত্রনে ছিল ৪৯ শতাংশ।
৪১ মিনিটে নাইম সিলটি অস্ট্রেলিয়ার বক্সের ভেতর বল পেয়ে শট নিলেও
অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষক ম্যাট রায়ানের গায়ে লেগে বাইরে চলে যায়। ৪২ মিনিটে
ফ্রি কিক থেকে ডিউক ডি বক্সে ক্রস করলে বলে হেড করেছিলেন ম্যাথু লেকি,
কিন্তু সেটি নিয়ন্ত্রনে নেন তিউনিশিয় গোলরক্ষক আয়মেন ডাহমেন।
ইনজুরি টাইমের তৃতীয় মিনিটে অবশ্য গোল পরিশোধের ভালো একটি সুযোগ পেয়েছিল
তিউনিশিয়া। বক্সের বাইরে থেকে জেবালির পাওয়া কাজে লাগাতে পারেননি ইউসুফ
মাসাকনি। তিনি যথাযথভাবে ঘুরিয়ে মারতে না পারলে বল চলে যায় গোল লাইনের
বাইরে। যে কারণে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যেতে হয় তিউনিশিয়াকে।
বিরতি থেকে ফেরার পর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে উঠে তিউনিশিয়া। প্রথম ৫ মিনিটের
মধ্যেই আদায় করে নেয় দুটি কর্নার। এই সময় কিছুটা রক্ষনাত্মক হয়ে উঠে
অস্ট্রেলিয়া। যে কারণে ওই কর্নারের সুবিধা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তারা।
ম্যাচের ৫২ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ফ্রি কিকের বল দারুনভাবে
গোলপোস্টে ফেলেছিলেন সিলটি। ওই সময় পোস্টের সামনে থেকে বলটি ফিরিয়ে দিয়ে
দলকে বিপদমুক্ত করেন সকারুজ গোল রক্ষক রায়ান। ৫৫ মিনিটে ফের গোলের সুযোগ
পায় অস্ট্রেলিয়া। তবে পোস্টের ভেতর থেকে ডিউকের নেয়া শট লক্ষ্যভ্রস্ট হয়।
৭০ মিনিটে প্রতি আক্রমন থেকে বদলী হিসেবে মাঠে নামা অস্ট্রেলিয়ার জেমি
ম্যাকলারেন ডান প্রান্ত দিয়ে ক্রস দিলে এগিয়ে আসা লেকি সময় মতো বলে পা
ছোঁয়াতে পারেননি। ওই সময় একবারেই ফাঁকায় ছিলেন তিনি।
৭২ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর জটলা থেকে তিউনিশিয় স্ট্রাইকার ইউসুফ মাসাকনি শট
নিলে সেটি ডান দিকে ঝাপিয়ে পড়ে ফিস্ট করেন অস্ট্রেলিয়া গোল রক্ষক রায়ান।
৮৪ মিনিটে তিউনিশিয় ডিফেন্ডার মোনতাসার তালবির ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া
জোড়ালো শটের বল গ্রীবে পুরে নেন রায়ান। অতিরিক্ত ৬ মিনিটসহ বাকী সময়ের
পুরোটাই তিউনিশিয়া বলের দখল বজায় রাখলেও অস্ট্রেলিয়ার জমাট রক্ষন ভেদ করে
গোলটি পরিশোধ করতে পারেনি। ফলে পরাজয় মেনেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
আগামী ৩০ নভেম্বর এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে
ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে তিউনিশিয়া। একই দিন আল-জানুব স্টেডিয়ামে ডেনমার্কের
মোকাবেলা করবে অস্ট্রেলিয়া।