জাদুকাটা নদীতে সেতু না থাকায় নদী পারা পারে দূর্ভোগের শেষ নেই সুনামগঞ্জের তিনটি উপজেলার লক্ষাধিকের বেশী চলাচলকারী মানুষের। সরকারী ব্যয়ে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলেও বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হলেও বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে।
কবে কাজ শুরু হবে তা কারো জানা নেই। তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুব আলম জানান,কাজ শুরু হবে আর আগামী বছরের জুন মাসে এর উদ্বোধন করা সম্ভব হবে আশা করি।
জেলার তাহিরপুর,মধ্যনগর ও র্ধমপাশা তিনটি উপজেলার বহু প্রতিক্ষিত ও কাংঙ্খিত স্বপ্ন পুরণের ধার প্রান্তে সীমান্ত এলাকায় যাদুকাটা নদীতে নির্মিত সেতুটির নির্মাণে সরকার কাজ শুরু করে। শেষ হলে যাদুর ছোঁয়া লাগবে,খোলবে অপার সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলবে বলছেন সচেতন মহল।
উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের এপারে(পশ্চিম)বোত্তাশাহ মাজার,ইসকন মন্দিরসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পষ্ট ওপারে(প‚র্ব) শাহ আরেফিন(রঃ) আস্তানা ও পনতীর্থ উৎসব কেন্দ্র ও অদৈত্ব মহাপ্রভুর মন্দির। মাঝে যাদুকাটা নদী। স্থানীয় এলাকাবাসী ও সর্ব মহলে দাবীর প্রেক্ষিতে নির্মিত সেতুটির নামকরণ করা হয়েছে শাহ আরেফিন সেতু অদ্বৈত মৈত্রী সেতু।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানাযায়,৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৮৫কোটি ৮৬লাখ টাকা। নির্মাণকাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে ৩০ মাসের মধ্যেই এই সেতুটির কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হলেও সেতুটির ৭০শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। সেতুর ১৪টি পিলার ও ৭৫টি গার্ডার নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিজের অন্যান্য কাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা জানান,উপজেলার যাদুকাটা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতু চালু হলে তিনটি শুল্ক বন্দর(বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী) স্থলবন্দর থেকে কয়লা, চুনাপাথর পরিবহন, পর্যটন স্পট শিমুল বাগান, শহীদ সিরাজ লেক,বারেকটিলা,টাংগুয়ার হাওরে প্রতিদিনই হাজার হাজার পর্যটক ও ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন যানবাহনে করে সহজে আসতে পারবেন। জেলার তাহিরপুর, ধর্মপাশা, মধ্যনগর উপজেলার সীমান্ত সড়ক দিয়ে জেলা সদরের সাথে ধর্মপাশা, নেত্রকোণা, ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকার সাথে যোগাযোগ সহজ হবে। যাদুকাটা নদীর উপর ‘শাহ আরেফিন ও অদ্বৈত মহাপ্রভু’ নামে সেতু নির্মাণ দ্রুত শেষ করে চালুর দাবী জানান।
উপজেলা প্রেসক্লাবে সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় বাসিন্দা আলম সাব্বির জানান,যাদুকাটা নদীর উপর কোনো সেতু না থাকায় নদী পার হতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় হাজার হাজার মানুষকে। তবে যাদুকাটা নদীতে শাহ আরেফিন (র.)অদ্বৈত মৈত্রী সেতু নির্মাণকাজ শেষ হলে দূর্ভোগ কাটিয়ে জীবন জীবিকার অবলম্বনে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার দাবী জানাই।
উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাদাঘাট বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুক মিয়া জানান,উন্নয়ন মূল চাবী যোগাযোগ ব্যবস্থা। যাদুকাটা নদীর উপর সেতু নির্মাণকাজ শেষ হলে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় জনদুর্ভোগ লাঘবে হবে। তাই এলাকার ব্যাপক পরিবর্তনের স্বার্থে দ্রুত নির্মানের দাবী জানাই।
বাদাঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন,যাদুকাটা নদীর উপর সেতু নির্মাণ শেষ হলে তিনটি স্থলবন্দর ও পযর্টন স্পটসহ এলাকার যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পাশাপাশি পর্যটনসমৃদ্ধ উপজেলা হিসেবে আরও ব্যাপকভাবে পরিচিতি পাবে।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আরিফ উল্লাহ খান বলেন,আশা করি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেতুর কাজ শেষ হবে। আর কাজ শেষ হলেই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুব আলম জানান,করোনা সহ বিভিন্ন কারনে সেতুটির কাজ সময় মত শেষ করা সম্ভব হয় নি। তবে ৭০ভাগ কাজ শেষ হয়েছে আশা করছি আগামী বছরের জুন মাসে এর উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।