বিজ্ঞপ্তি
নভেম্বর / ০৯ / ২০২২
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাওনপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী মো. তোতা মিয়ার সম্পদ জবর দখলের জন্য তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তোতা মিয়ার পক্ষে এমন অভিযোগ করেছেন তার ভাগ্নে নগরীর মধুশহীদ এলাকার বাসিন্দা নুর আহমদ কামাল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তোতা মিয়া যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর থেকেই নিজের আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশিদের সকসময় সহযোগিতা করে আসছেন। দীর্ঘদিন সাহায্য-সযোগিতা পেয়েও তোতা মিয়ার অর্ধ কোটি টাকা তারা আত্মসাৎ করে। শুধু তাই নয় এক সময় তারা তোতা মিয়ার জমি-সম্পত্তি দখল করার পায়তারা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় একপর্যায়ে তোতা মিয়ার প্রায় ১৫ কেদার জমি জবরদখল করে নেওয়ার পায়তারা শুরু করে তারা। এসব বিষয়ে তোতা মিয়া প্রতিবাদ করলে এক সময় এই সাহায্যগ্রহীতারা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে দেয়।
এমন কর্মকাÐে যারা লিপ্ত তাদেরকে পাক হানাদারদের দুসর, কুচক্রি মহল প্রতিহিংসাপরায়ণ উল্ল্যেখ করে নুর আহমদ কামাল বলেন, ১৯৭১ সালে নিজের প্রাণের মায়া ত্যাগ করে লাল-সবুজের পতাকার বিজয় ছিনিয়ে আনার দীর্ঘ অর্ধশত বছর পর পাক হানাদারদের দুসর একটি কুচক্রি মহল প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা তোতা মিয়ার প্রতিবেশী ও নিজের গোষ্ঠীর লোকজন বলেও জানান তিনি।
তোতা মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের দাবিতে একটি ষড়যন্ত্রমূলক মানববন্ধনের কথা উল্ল্যেখ করে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে তোতা মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের দাবিতে একটি ষড়যন্ত্রমূলক মানববন্ধনের আয়োজন করলো। এ বিষয়ে পরে সিলেটের দু-একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সে মানববন্ধনে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের’ উপস্থিতির কথা উল্লেখ করা হলেও সেখানে উপস্থিতিতের মধ্যে কেউই সম্মুখসারীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। এছাড়াও লোকমুখে শুনা যাচ্ছে- কথিত মানববন্ধনে যারা উপস্থিত হয়েছেন তাদের টাকা-পয়সা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ টাকা-পয়সার বিনিময়ে এদের মানববন্ধনে নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন- বাওনপুর গ্রামের মৃত মানিক মিয়ার ছেলে মিন্টু মিয়া ও এমরান মিয়া, মৃত মন্তাজ মিয়ার ছেলে সাদেক মিয়া, মৃত মানিক মিয়ার ছেলে রাজু আহমদ, মৃত মখলিছ মিয়ার ছেলে আজাদ মিয়া ও সুহেল মিয়া, মৃত ময়না মিয়ার ছেলে ফয়েজ আহমদ ও গৌছ মিয়া, মৃত আলকাছ আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ, সিরাজ মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া ও সাইফুর রহমান, মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে সিরাজ মিয়া, মৃত মরম আলীর ছেলে চান্দালী ও মশ্রব আলী, মৃত সুরুজ আলীর ছেলে ফয়জুর রহমান, তমিজ আলীর ছেলে ফেরদৌস মিয়া, হানিফ আলীর ছেলে মাশুক মিয়া, নইমুদ্দিনের ছেলে আকবর, মৃত মুজাফফরের ছেলে দুদু মিয়া, মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুল লতিফ, জমিরের ছেলে মইনুদ্দিন, কনু মিয়ার ছেলে আশিক মিয়া, আব্দুল আলীর ছেলে আবদুল বশর, আখরম আলীর ছেলে ফারুক মিয়া, মৃত নুর মিয়ার ছেলে আবদুল বাছিত তাদের সহযোগীরা। এছাড়াও অভিযুক্ত আকবর, গৌছ মিয়া, ফয়েজ আহমদ, আব্দুল্লাহ, মিন্টু, রাজু আহমদ, এমরান, মাসুক, ফেরদৌস ও চান মিয়ার ছেলে মাহিম আহমদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বীর মুক্তিযোদ্ধার তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।
তোতা মিয়ার তাঁর জায়গা-জমি জবদখলের অপচেষ্টার পর ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা করে এসব জায়গা-জমি উদ্ধার করা, পুলিশ প্রতিবেদনও তোতা মিয়ার পক্ষে যাওয়া, তোতা মিয়াকে ঘায়েল করতে না পারার বারণেই তাঁর মুক্তিযোদ্ধা খেতাবের উপর স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িতরা কলঙ্কের কালি লেপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান।
তিনি বলেন, দাঙ্গাবাজ ও আইনের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল লোকজন তোতা মিয়া তাঁর পিতার নাম পরিবর্তন করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজেছেন। অথচ ষড়যন্ত্রকারীরা তোতা মিয়ার বাবার নামের একাংশ ‘মো. ইন্তাজ উল্লা’ উল্লেখ করে বাকি অংশ ‘ইউনুছ আলী’ বাদ দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে তোতা মিয়ার বাবার পুরো নাম ‘মো. ইন্তাজ উল্লা (ইউনুছ আলী)’। বিষয়টি তোতা মিয়ার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিস্বরূপ সরকারি সকল সনদপত্রে উল্লেখ আছে। এছাড়াও তোতা মিয়া ও তার পিতার নিকাহনামায় ‘মো. ইন্তাজ উল্লা (ইউনুছ আলী)’ উল্লেখ করা আছে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট সিলেটের মুক্তিযুযোদ্ধা কমান্ড ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট এবং ও যুদ্ধকালীন সাব-সেক্টর কমান্ডারদের বিভিন্ন সময় তোতা মিয়াকে দেওয়া প্রত্যয়পত্রেও তাঁর বাবার নাম ‘মো. ইন্তাজ উল্লা (ইউনুছ আলী)’ উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং সহজেই অনুমেয়- অপপ্রচারকারীদের এসব কথা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়াকে সামাজিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন করতেই তাদের এই অপপ্রচার।
এ সময় তিনি সবাইকে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য এবং প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের মন্ত্রনালয়কে এই চক্রের সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান।